উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন সম্প্রতি রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধে “নিঃশর্ত সমর্থন” জানিয়েছেন, যা দুই দেশের মধ্যকার কৌশলগত জোটকে আরও শক্তিশালী করছে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সাথে বৈঠকে কিম এই ঘোষণা দেন, যেখানে উত্তর কোরিয়া অতিরিক্ত ৩০,০০০ সৈন্য পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে ইউক্রেনের গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে।
রাশিয়ার প্রতি উত্তর কোরিয়ার অটল সমর্থন
কিম জং উন ও লাভরভের বৈঠকটি উত্তর কোরিয়ার ওন্সান শহরে অনুষ্ঠিত হয়। এসময় কিম রাশিয়ার ইউক্রেন অভিযানের প্রতি তার সরকারের পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানায়, উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার সব পদক্ষেপকে “নিঃশর্তভাবে সমর্থন ও উৎসাহিত” করবে।
সৈন্য ও অস্ত্র সহায়তা বৃদ্ধি
ইউক্রেনের গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী,
- উত্তর কোরিয়া ইতিমধ্যে ১১,০০০ সৈন্য রাশিয়ায় পাঠিয়েছে, এবং এবার আরও ২৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে।
- এছাড়া, গত বছর উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে ১০০টি ব্যালিস্টিক মিসাইল ও ৯০ লাখ আর্টিলারি শেল সরবরাহ করেছে, যা রাশিয়ার যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করছে।
কী পাচ্ছে উত্তর কোরিয়া?
বিশ্লেষকদের মতে, উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র প্রযুক্তি, ড্রোন তৈরির জ্ঞান এবং অর্থনৈতিক সহায়তা পাচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার পুসান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির রবার্ট কেলি বলেছেন,
“উত্তর কোরিয়া তার সৈন্যদের বিনিময়ে রাশিয়ার কাছ থেকে মূল্যবান প্রযুক্তি পাচ্ছে, যা তারা নিজেরা তৈরি করতে পারে না।”
পর্যটন ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা
লাভরভ তার সফরে উত্তর কোরিয়ার নতুন সমুদ্র resort কালমা বিচের প্রশংসা করেন এবং রাশিয়ান পর্যটকদের জন্য ভ্রমণের সুযোগ বাড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। উত্তর কোরিয়া এই প্রকল্পকে বিদেশি মুদ্রা আয়ের উৎস হিসেবে দেখছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেছেন এবং ইউক্রেনকে আরও সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার এই জোট বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা তৈরি করেছে।
উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার জোট ইউক্রেন যুদ্ধকে আরও জটিল করে তুলেছে। কিম জং উনের সমর্থন ও সামরিক সহায়তা রাশিয়ার যুদ্ধ কৌশলকে শক্তিশালী করলেও এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। ভবিষ্যতে এই মিত্রতা বিশ্ব নিরাপত্তা কাঠামোকে কীভাবে প্রভাবিত করে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
© The Continental Herald 2025 | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত