পাকিস্তান তাদের আকাশসীমা ভারতের জন্য বন্ধ করে দেওয়ায় বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে ভারতের জাতীয় বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া। সংস্থাটি জানিয়েছে, যদি এই নিষেধাজ্ঞা এক বছর স্থায়ী হয়, তাহলে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি লোকসান হবে তাদের।
রয়টার্সের হাতে পাওয়া একটি চিঠিতে দেখা যায়, টাটা গ্রুপের মালিকানাধীন এয়ার ইন্ডিয়া সম্প্রতি ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছে এই ক্ষতি পুষিয়ে দিতে একটি ‘সাবসিডি মডেল’ চালুর জন্য। চিঠিতে বলা হয়েছে, “আন্তর্জাতিক ক্ষতিগ্রস্ত ফ্লাইটগুলোর জন্য ভর্তুকি একটি সঠিক, যাচাইকৃত ও ন্যায্য ব্যবস্থা।”
এয়ার ইন্ডিয়ার দাবি, পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধ থাকায় দীর্ঘপথে ঘুরে যেতে হচ্ছে, ফলে অতিরিক্ত জ্বালানি ব্যয়, অতিরিক্ত পাইলট ও কেবিন ক্রু নিতে হচ্ছে, যা প্রতিদিনই খরচ বাড়াচ্ছে।
গত বছরও সংস্থাটি ৫২০ মিলিয়ন ডলারের লোকসান করেছে, এমনিতেই তারা বহুল আলোচিত টার্নঅ্যারাউন্ড প্রকল্পে কাজ করছে। এর মধ্যে বোয়িং ও এয়ারবাসের ডেলিভে বিলম্ব তাদের পরিকল্পনাকে আরও বাধাগ্রস্ত করছে।
ভারত থেকে ইউরোপ, আমেরিকা ও কানাডাগামী দীর্ঘপথের বেশিরভাগ ফ্লাইটই পাকিস্তানের আকাশপথ ব্যবহার করে থাকে। শুধু এপ্রিল মাসেই দিল্লি থেকে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আমেরিকার দিকে এয়ার ইন্ডিয়া ও ইন্ডিগোর মিলিত ফ্লাইট সংখ্যা ছিল প্রায় ১২০০টি।
বর্তমানে ভারতের বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় বিভিন্ন বিকল্প খতিয়ে দেখছে। এর মধ্যে রয়েছে—চীনের কাছাকাছি পাহাড়ি পথ ব্যবহার, কিছু কর মওকুফ, এবং চীনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নতুন ওভারফ্লাইট অনুমোদনের চেষ্টা।
অর্থনৈতিক দিক থেকে দেখলে, পাকিস্তানের এ সিদ্ধান্ত ভারতের জন্য কৌশলগতভাবে একটি বড় চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘ মেয়াদে এতে বিমানখাতেই শুধু নয়, বিদেশি বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
আপনার মতামত জানান: ভারতের এই সংকট মোকাবেলায় কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত সরকারের?