ধর্ষণের পর ছাত্রদল নেতা বহিষ্কৃত, কিন্তু প্রশ্ন উঠছে—এই দল কি অপরাধীর আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে?
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে যা ঘটেছে, তা শুধু একটি ধর্ষণের ঘটনা নয়—এটি একটি রাজনৈতিক সংগঠনের মুখোশ উন্মোচনের লোমহর্ষক দলিল। উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল আহমেদ নামের এক যুবক বন্ধুকে ‘ছাত্রলীগ’ নেতা হিসেবে পুলিশে ধরিয়ে দিয়ে তার হবু স্ত্রীকে হোটেল কক্ষে ঢুকে ধর্ষণ করেছেন।
এমন ঘৃণ্য ও বিকৃত মানসিকতার অপরাধ সংগঠনের নেতৃত্বে থাকা এক যুবকের কাছ থেকে আসবে, তা শুধু ছাত্রদলের নয়—সমগ্র ছাত্ররাজনীতির জন্যই লজ্জাজনক।
ছাত্রদল কি ধর্ষকদের নিরাপদ ঠিকানা হয়ে উঠেছে?
সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক ঘটনায় দেখা যাচ্ছে, ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা জড়াচ্ছেন নারী নির্যাতন, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির মতো জঘন্য অপরাধে। এর আগে গত ২৯ মার্চ দুর্গাপুরের আরও দুই ছাত্রদল নেতা সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে পদ হারিয়েছেন। এবার ফয়সালের ন্যক্কারজনক কাণ্ড আবারও প্রশ্ন তোলে—ছাত্রদল আদৌ রাজনৈতিক আদর্শ চর্চার ক্ষেত্র, নাকি অপরাধীদের লালন-পালনের সংগঠন?
বহিষ্কার করলেই দায়িত্ব শেষ হয় না
ফয়সালকে বহিষ্কার করে দায় এড়াতে চাচ্ছে জেলা ছাত্রদল। কিন্তু এটি কি যথেষ্ট? যে নেতা বন্ধু ও হবু স্ত্রীর বিশ্বাস ভেঙে এমন বর্বর ঘটনা ঘটাতে পারেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনে ছিলেন—তাকে কে তৈরি করলো, কার ছত্রছায়ায় থাকলেন এতদিন?
এই ছাত্রদল কারা চালায়, কী নীতিতে চালায়?
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কি আদৌ জানে—তাদের তৃণমূল নেতারা কোন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত? নাকি নেতাদের চোখ বন্ধ করে এসব অপরাধে মৌন সমর্থন দেওয়া হচ্ছে?
একটা ধর্ষণ, একটা হেয় দল
একজন নারীকে হোটেলে একা পেয়ে ধর্ষণ করার আগে, ফয়সাল নিজের বন্ধুকেও ফাঁদে ফেলেন, ‘ছাত্রলীগ’ পরিচয় দিয়ে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেন। এমন নোংরামি, বিশ্বাসঘাতকতা এবং বর্বরতা কোনো সভ্য সমাজে কল্পনাও করা যায় না। আর এই অপকর্ম করে যিনি দীর্ঘদিন ছাত্রদলে নেতৃত্বে ছিলেন—তিনি একাই নন, গোটা সংগঠনই প্রশ্নবিদ্ধ।
ছাত্রদল চাইলে এখনই আত্মসমালোচনা করে শুদ্ধি অভিযান শুরু করতে পারে—না হলে খুব শিগগিরই এই সংগঠন ‘রাজনৈতিক অপরাধীদের ঘাঁটি’ নামেই পরিচিত হয়ে উঠবে।