নিজস্ব প্রতিবেদক, The Continental Herald
প্রকাশিত: ০৬ মে ২০২৫, ১১:১৮ PM
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, “ভারতের পানি কেবল ভারতের স্বার্থেই ব্যবহার করা হবে।” জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের সঙ্গে ৬৫ বছরের পুরনো সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি (Indus Water Treaty) বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। মঙ্গলবার দিল্লিতে এক ভাষণে মোদি এই ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, পাকিস্তানের জন্য পানি সরবরাহ বন্ধের সিদ্ধান্তে কোনো রদবদল হবে না।
সিন্ধু চুক্তি বাতিলের পেছনে কারণ
গত ২২ এপ্রিল, পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখায়। সরকারের দাবি, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই ও ডিপ স্টেট এই হামলার পেছনে জড়িত। এর জবাবে ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। তারপরই পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল করে এবং সবচেয়ে বড় ধাপ হিসেবে সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে।
এই চুক্তি অনুযায়ী, সিন্ধু নদ ও তার উপনদীগুলোর পানি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ভাগ করা হয়। কিন্তু এখন ভারত চুক্তি বাতিল করে নতুন বাঁধ ও জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে পাকিস্তানের কৃষি ও অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা হতে পারে।
পাকিস্তানের পাল্টা পদক্ষেপ ও উত্তেজনা
ভারতের সিদ্ধান্তের জবাবে পাকিস্তানও ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তি স্থগিত করেছে। এছাড়াও হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে সিন্ধু চুক্তি বাতিল করা যুদ্ধের সমতুল্য। দুই দেশই ইতিমধ্যে সীমান্ত ও আকাশপথ বন্ধ করে দিয়েছে, যা অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
মোদির জোরালো বক্তব্য
মোদি তার ভাষণে বলেন, “ভারতের সম্পদ শুধু ভারতের উন্নয়নেই কাজে লাগবে। আমরা আমাদের পানিকে আর বিদেশে প্রবাহিত হতে দেব না।”
তার এই মন্তব্য দেশজুড়ে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে। বিশেষ করে কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের কঠোর অবস্থানের প্রতি জনগণের সমর্থন ফুটে উঠেছে।
ভবিষ্যতের সম্ভাব্য প্রভাব
এই সিদ্ধান্তের ফলে:
- পাকিস্তানের ৮০% কৃষিজমি সেচের পানি সংকটে পড়তে পারে।
- দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সংঘাত আরও তীব্র হবে।
- আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
“ভারতের পানি শুধুমাত্র ভারতের স্বার্থে ব্যবহার হবে”—মোদির এই ঘোষণা শুধু একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নয়, বরং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কৌশলগত চাপ বাড়ানোর একটি বড় পদক্ষেপ। উত্তপ্ত এই পরিস্থিতিতে দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে সংঘাত কি আরও বাড়বে? বিশ্ব এখন সেদিকেই তাকিয়ে আছে।
© The Continental Herald 2025 | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত