The Continental Herald ডেস্ক | ৪ মে ২০২৫
গাজায় আরও বড় ধরনের সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি হিসেবে লক্ষাধিক রিজার্ভ সেনাকে সক্রিয় করার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পশ্চিম তীর ও অভ্যন্তরীণ ঘাঁটিতে মোতায়েন থাকা সেনাদের গাজায় স্থানান্তরের জন্য রিজার্ভ সেনাদের ডাকা হচ্ছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র বিষয়টি নিশ্চিত না করলেও বিভিন্ন সাংবাদিক ও নাগরিকদের আত্মীয়স্বজন ইতোমধ্যেই ডাকার চিঠি পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
দেশটির সরকারি সম্প্রচার সংস্থা জানিয়েছে, রোববার (৫ মে) ইসরায়েলি নিরাপত্তা ক্যাবিনেটের বৈঠকে গাজায় সামরিক অভিযান আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত অনুমোদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
গত ১৮ মার্চ, দুই মাসব্যাপী যুদ্ধবিরতির প্রক্রিয়া ভেঙে দিয়ে গাজা জুড়ে পুনরায় বড় আকারের হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এ পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২,৪৯৫ জন, যার মধ্যে ২,৩৯৬ জন নিহত হয়েছেন শুধু মার্চ থেকে শুরু হওয়া সাম্প্রতিক হামলায়।
শনিবার রাতে গাজার খান ইউনিস শরণার্থী ক্যাম্পে ইসরায়েলি বিমান হামলায় শিশুসহ অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার সিভিল ডিফেন্স। নিহতদের মধ্যে একটি মাত্র এক মাস বয়সী শিশু এবং দুইজন এক বছর বয়সী শিশু রয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই হামলার কথা স্বীকার করে জানিয়েছে, লক্ষ্যবস্তু ছিল একজন হামাস সদস্য। তবে বেসামরিক প্রাণহানি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও জাতিসংঘ।
এদিকে হামাস শনিবার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে রাশিয়ান-ইসরায়েলি দ্বৈত নাগরিক ম্যাক্সিম হারকিনকে আহত অবস্থায় দেখা যায়। হারকিনের পরিবার ভিডিওটি গণমাধ্যমে প্রচারের আহ্বান জানিয়েছে যাতে বন্দিদের মুক্তির জন্য সরকারের ওপর চাপ বাড়ে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে শনিবার হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করে। তারা সরকারের কাছে বন্দিদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানায়। বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, “আমরা এখানে এসেছি কারণ আমরা চাই বন্দিরা বাড়ি ফিরুক। গাজায় বর্তমান যুদ্ধ আর ন্যায্য নয়।”
হামলার বিপদে বন্দিরাও
সমালোচকরা বলছেন, যুদ্ধ জোরদার করায় বাকি বন্দিরা আরও বেশি ঝুঁকিতে পড়ছে। Hostages and Missing Families Forum এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “যেকোনো সামরিক উত্তেজনা বন্দিদের জীবনকে আরও বিপন্ন করে তুলবে।”
উল্লেখ্য, হামাসের হাতে এখনও ৫৮ জন বন্দি রয়েছে, যাদের মধ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে ৩৪ জন ইতোমধ্যেই মারা গেছেন।
গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করছে ইসরায়েল। ২ মার্চ থেকে সমস্ত সাহায্য পাঠানো বন্ধ রয়েছে। জাতিসংঘ এর ফলে এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছে।