দোহা সফরের আগে বড় বিতর্কে ট্রাম্প প্রশাসন
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ও দ্বিতীয়বারের জন্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, কাতারের রাজপরিবারের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে একটি বিলাসবহুল বোয়িং ৭৪৭-৮ বিমান পেন্টাগনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সরকার গ্রহণ করতে যাচ্ছে। এই বিমানটি অস্থায়ীভাবে “এয়ার ফোর্স ওয়ান” হিসেবে ব্যবহার করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
রবিবার ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ এক পোস্টে লেখেন, “বিমানটি উপহার, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে, এবং এটি খুবই স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা হবে।” এর আগে সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানায়, এই বহুমূল্য বিমানটি ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় মেয়াদে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হবে।
বিতর্কের কেন্দ্রে বিলাসবহুল উপহার
বিমানটির মূল্য শত শত মিলিয়ন ডলার এবং এ ধরনের উপহার আগে কখনো কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট গ্রহণ করেননি। এক কাতারি কর্মকর্তা জানান, এটি একটি সরকার থেকে সরকারে উপহার, যা কাতারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পেন্টাগনের মাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে।
তবে সমালোচকরা বলছেন, এটি কেবল একটি উপহার নয়, বরং এতে বিদেশি প্রভাব বিস্তারের শঙ্কা রয়েছে। ডেমোক্র্যাট পার্টির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, “কাতারের সৌজন্যে তৈরি ট্রাম্পের এয়ার ফোর্স ওয়ান – এটাই ট্রাম্পের আসল ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি।”
নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে শঙ্কা
যুক্তরাষ্ট্রের সিক্রেট সার্ভিস একে ‘নিরাপত্তার দুঃস্বপ্ন’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। তাদের মতে, বিমানটিকে সম্পূর্ণরূপে পরীক্ষা না করে প্রেসিডেন্টের ব্যবহারে দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। বোয়িংটির ভেতরে গুপ্তচর যন্ত্রপাতি রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হোয়াইট হাউস কমিউনিকেশন এজেন্সি, সিআইএ ও এনএসএ যৌথভাবে কাজ শুরু করবে।
লুমার সমালোচনা ও ট্রাম্পের আত্মবিশ্বাস
ট্রাম্পপন্থী হিসেবে পরিচিত ডানপন্থী অ্যাক্টিভিস্ট লরা লুমার বলেছেন, “আমি ট্রাম্পের জন্য গুলি খেতেও প্রস্তুত, কিন্তু এই বিমান উপহার গ্রহণ করলে সেটি হবে তার প্রশাসনের জন্য এক কলঙ্ক।”
তবে ট্রাম্প এসব সমালোচনাকে উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেছেন, এটি একটি স্বচ্ছ এবং আমেরিকার স্বার্থেই নেওয়া সিদ্ধান্ত।
তিনি সোমবার কাতারে তার প্রথম বৈদেশিক সফরে যাচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এই সফরেই উপহারের বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে।
বিমানটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
জানা গেছে, ট্রাম্প ক্ষমতা ছাড়ার পর বিমানটি তার প্রেসিডেনশিয়াল লাইব্রেরিতে দান করা হবে, যাতে তিনি ভবিষ্যতেও এটি ব্যবহার করতে পারেন।
এয়ার ফোর্স ওয়ানের মতো একটি স্পর্শকাতর প্রতীক কীভাবে বিদেশি উপহারে পরিণত হতে পারে— সেই প্রশ্নই এখন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক মহলে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়।