ভারতের পাহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার জবাবে দেশটি পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে (PoK) বিভিন্ন স্থানে একটি সামরিক অভিযান চালিয়েছে, যার নাম দিয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। এই নামকরণ সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে বিশেষ প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে।
ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অভিযানটি সুনির্দিষ্ট ও পরিমিত ছিল, এবং তা মূলত জঙ্গি সংগঠনগুলোর অবকাঠামো লক্ষ্য করে পরিচালিত হয়েছে। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, অভিযানে কোতলি, মুরিদকে, বাহাওয়ালপুর, সিয়ালকোটসহ একাধিক স্থানে হামলা চালানো হয়েছে।
‘সিঁদুর’ নামকরণের পেছনের প্রসঙ্গ
‘সিঁদুর’ শব্দটি হিন্দু বিবাহিত নারীদের এক সাংস্কৃতিক প্রতীক। ভারতের সেনাবাহিনী জানায়, পাহেলগাঁও হামলায় যেসব নারীরা স্বামীকে হারিয়েছেন, সেই শোক ও তাদের অনুভূতির প্রতীক হিসেবেই এই নামকরণ করা হয়েছে।
একটি প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, “Operation Sindoor” লেখা রয়েছে বড় অক্ষরে, যেখানে একটি ‘O’ অক্ষরে সিঁদুরের পাত্রের চিত্র রয়েছে—যেটি আংশিক গড়িয়ে পড়েছে, যার মাধ্যমে নিহতদের স্মরণ করা হয়েছে।
হামলার পটভূমি ও সাম্প্রতিক অভিযান
২২ এপ্রিল, পাহেলগাঁওতে একটি ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৬ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হন। হামলার ধরন ও লক্ষ্যবস্তু নির্বাচন ঘিরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় ভারতে। নিহতদের মধ্যে পর্যটকরাও ছিলেন।
এর জবাবে ভারত সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর সমন্বয়ে এক যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। এই অভিযানের মাধ্যমে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা ও জয়েশ-ই-মোহাম্মদ-এর ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয় বলে ভারতীয় সূত্র জানায়।
ভারতের অবস্থান ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “এই পদক্ষেপ ছিল সুনির্দিষ্ট, ভারসাম্যপূর্ণ এবং উত্তেজনা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে নয়।”
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ একে “ভারতের পক্ষ থেকে যুদ্ধ ঘোষণার সমতুল্য” বলে উল্লেখ করেন এবং পাল্টা প্রতিক্রিয়ার ঘোষণা দেন। এর মধ্যে সীমান্তে গুলিবিনিময়ে কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে উভয়পক্ষ দাবি করেছে।